তুমি যে-সব ভুল করতে সেগুলো খুবই মারাত্মক ছিল। তোমার কথায় ছিল গেঁয়ো টান, অনেকগুলো শব্দের করতে ভুল উচ্চারণ: ‘প্রমথ চৌধুরী’কে তুমি বলতে ‘প্রথম চৌধুরী’; ‘জনৈক’ উচ্চারণ করতে গিয়ে সর্বদাই ‘জৈনিক’ বলে ফেলতে। এমনি বহুতর ভয়াবহ ভুলে-ভরা ছিল তোমার ব্যক্তিগত অভিধান। কিন্তু সে-সময়, সেই সুদূর কৈশোরে ঐ মারাত্মক ভুলগুলো তোমার বড়-বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলুম।
তোমার পরীক্ষার খাতায় সর্বদাই সাধু ও চলতির দূষণীয় মিশ্রণ ঘটাতে। ভাষা-ব্যবহারে তুমি বরাবরই খুব অমনোযোগী ছিলে। বেশ হাবাগোবা গোছের লাজুক ও অবনতমুখী মেয়ে ছিলে তুমি। ‘শোকাভিভূত’ বলতে গিয়ে ব’লে ফেলতে ‘শোকভূত’। তোমার উচ্চারণের ত্র্রুটি, বাক্যমধ্যস্থিত শব্দের ভুল ব্যবহারে আমি তখন এক ধরনের মজাই পেতুম।
২০-বছর পর আজ তোমার বক্ততা শুনলুম। বিষয়: ‘নারী-স্বাধীনতা’! এত সুন্দর, স্পষ্ট ও নির্ভুল উচ্চারণে তোমার বক্তব্য রাখলে যে, দেখে অবাক ও ব্যথিত হলুম।
আমার বুকের মধ্যে জেঁকে-বসা একটি পাথর বিশ বছর পর নিঃশব্দে নেমে গেল।
তুমি: বিশ বছর আগে ও পরে // রফিক আজাদ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment