Showing posts with label দ্বৈত আবৃত্তির কবিতা. Show all posts
Showing posts with label দ্বৈত আবৃত্তির কবিতা. Show all posts

ছন্নছাড়া - অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত

গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে।
গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া।
আঁকাবাঁকা শুকনো কতগুলো কাঠের কঙ্কাল
শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া---
রুক্ষ, রুষ্ট, রিক্ত, জীর্ণ।
লতা নেই, পাতা নেই, ছায়া নেই, ছাল-বাকল নেই;
নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি,
এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনা।
ঐ পথ দিয়ে জরুরী দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।
ড্রাইভার বল্লে, 'ওদিকে যাব না।
দেখছেন না ছন্নছাড়া ক'টা বেকার ছোকরা
রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
চোঙা প্যান্ট, চোখা জুত, রোখা মেজাজ, ঢোকা কপাল।
ওখান দিয়ে গেলেই গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে।
বলবে হাওয়া খাওয়ান।'

যা চেয়েছি, যা পাবো না - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

- কী চাও আমার কাছে?
- কিছু তো চাইনি আমি !
- চাওনি তা ঠিক ।
তবু কেন এমন ঝড়ের মতো ডাক দাও?
- জানি না । ওদিকে দ্যাখো ...
রোদ্দুরে রুপোর মতো জল
তোমার চোখের মতো দূরবর্তী নৌকো
চর্তুদিকে তোমাকেই দেখা।
- সত্যি করে বলো, কবি, কী চাও আমার কাছে?
- মনে হয় তুমি দেবী
- আমি দেবী নই ।
- তুমি তো জানো না তুমি কে !

গল্প বলা - সুকুমার রায়


"এক যে রাজা"- "থাম না দাদা,
রাজা নয় সে, রাজ পেয়াদা "
"
তার যে মাতুল"- "মাতুল কি সে ?
সবাই জানে সে তার পিসে "
"
তার ছিল এক ছাগল ছানা"-
"
ছাগলের কি গজায় ডানা ?"

কর্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


             ভৃত্যের না পাই দেখা প্রাতে।
দুয়ার রয়েছে খোলা,                স্নানজল নাই তোলা,
             মূর্খাধম আসে নাই রাতে।
মোর ধৌত বস্ত্রখানি              কোথা আছে নাহি জানি,
            কোথা আহারের আয়োজন!
বাজিয়া যেতেছে ঘড়ি            বসে আছি রাগ করি
             দেখা পেলে করিব শাসন।

সাহেব ও মোসাহেব – কাজী নজরুল ইসলাম


সাহেব কহেন, “চমৎকার! সে চমৎকার!”
মোসাহেব বলে, “চমৎকার সে হতেই হবে যে!
হুজুরের মতে অমত কার?”

সাহেব কহেন, “কী চমৎকার,
বলতেই দাও, আহা হা!”
মোসাহেব বলে, “হুজুরের কথা শুনেই বুঝেছি,
বাহাহা বাহাহা বাহাহা!”

কথোপকথন – ৪ পূর্ণেন্দু পত্রী

যে কোন একটা ফুলের নাম বল
দুঃখ
যে কোন একটা নদীর নাম বল
বেদনা
যে কোন একটা গাছের নাম বল
দীর্ঘশ্বাস
যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল
অশ্রু
এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি
বলো
খুব সুখী হবে জীবনে
শ্বেত পাথরে পা
সোনার পালঙ্কে গা
এগুতে সাতমহল
পিছোতে সাতমহল
ঝর্ণার জলে স্নান
ফোয়ারার জলে কুলকুচি
তুমি বলবে, সাজবো
বাগানে মালিণীরা গাঁথবে মালা
ঘরে দাসিরা বাটবে চন্দন
তুমি বলবে, ঘুমবো
অমনি গাছে গাছে পাখোয়াজ তানপুরা,
অমনি জোৎস্নার ভিতরে এক লক্ষ নর্তকী
সুখের নাগর দোলায় এইভাবে অনেকদিন
তারপর
বুকের ডান পাঁজরে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে
রক্তের রাঙ্গা মাটির পথে সুড়ঙ্গ কেটে কেটে
একটা সাপ
পায়ে বালুচরীর নকশা
নদীর বুকে ঝুঁকে-পড়া লাল গোধূলি তার চোখ
বিয়েবাড়ির ব্যাকুল নহবত তার হাসি,
দাঁতে মুক্তোর দানার মত বিষ,
পাকে পাকে জড়িয়ে ধরবে তোমাকে
যেন বটের শিকড়
মাটিকে ভেদ করে যার আলিঙ্গন
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত হাসির রং হলুদ
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত গয়নায় শ্যাওলা
ধীরে ধীরে তোমার মখমল বিছানা
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে সাদা
সেই সাপটা বুঝি তুমি ?
না
তবে?
স্মৃতি
বাসর ঘরে ঢুকার সময় যাকে ফেলে এসেছিলে
পোড়া ধুপের পাশে

মনে থাকবে? - আরণ্যক বসু



পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো
মনে থাকবে?

বুকের মধ্যে মস্ত বড় ছাদ থাকবে
শীতলপাটি বিছিয়ে দেব;
সন্ধে হলে বসবো দুজন।
একটা দুটো খসবে তারা
হঠাৎ তোমার চোখের পাতায় তারার চোখের জল গড়াবে
ক্লান্ত কবির গান গাইবে
তখন আমি চুপটি রে দুচোখ রে থাকবো চেয়ে
মনে থাকবে?

বুঝিয়ে বলা - সুকুমার রায়


 
আবৃত্তি: আরিফ শামসুল

শ্যামাদাস ! আয় দেখি ' তো দেখি এখেনে,
সেই কথাটা বুঝিয়ে দেব পাঁচ মিনিটে, দেখে নে
জ্বর হয়েছে ? মিথ্যে কথা ! ওসব তোদের চালাকি-
এই যে বাবা চেঁচাচ্ছিলে, শুনতে পাইনি ? কালা কি?
মামার ব্যামো ? বদ্যি ডাকবি ? ডাকিস নাহয় বিকেলে ;
না হয় আমি বাৎলে দেব বাঁচবে মামা কি খেলে
আজকে তোকে সেই কথাটা বোঝাবই বোঝাব-
না বুঝ্‌‌বি মগজে তোর গজাল দিয়ে গোঁজাব
_