Showing posts with label হাসির কবিতা. Show all posts
Showing posts with label হাসির কবিতা. Show all posts

সফদার ডাক্তার - হোসনে আরা


সফদার ডাক্তার
মাথা ভরা টাক তার
খিদে পেলে পানি খায় চিবিয়ে।

চেয়ারেতে রাত দিন
বসে গুনে দুই তিন
পড়ে বই আলোটারে নিভিয়ে।

ইয়া বড় গোফ তার
নাই তার জুড়ি দার
শুলে তার ভুড়ি ঠেকে আকাশে।

সৎপাত্র - সুকুমার রায়


শুনতে পেলুম পোস্তা গিয়ে-
তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে ?
গঙ্গারামকে পাত্র পেলে ?
জান্‌‌তে চাও সে কেমন ছেলে ?
মন্দ নয় সে পাত্র ভাল-
রঙ যদিও বেজায় কালো ;
তার উপরে মুখের গঠন
অনেকটা ঠিক প্যাঁচার মতন

ভয় পেয়ো না - সুকুমার রায়



ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না, তোমায় আমি মারব না
সত্যি বলছি কুস্তি 'রে তোমার সঙ্গে পারব না।
মনটা আমার বড্ড নরম, হাড়ে আমার রাগটি নেই,
তোমায় আমি চিবিয়ে খাব এমন আমার সাধ্যি নেই!

বুঝিয়ে বলা - সুকুমার রায়


 
আবৃত্তি: আরিফ শামসুল

শ্যামাদাস ! আয় দেখি ' তো দেখি এখেনে,
সেই কথাটা বুঝিয়ে দেব পাঁচ মিনিটে, দেখে নে
জ্বর হয়েছে ? মিথ্যে কথা ! ওসব তোদের চালাকি-
এই যে বাবা চেঁচাচ্ছিলে, শুনতে পাইনি ? কালা কি?
মামার ব্যামো ? বদ্যি ডাকবি ? ডাকিস নাহয় বিকেলে ;
না হয় আমি বাৎলে দেব বাঁচবে মামা কি খেলে
আজকে তোকে সেই কথাটা বোঝাবই বোঝাব-
না বুঝ্‌‌বি মগজে তোর গজাল দিয়ে গোঁজাব

বাবুরাম সাপুড়ে - সুকুমার রায়


বাবুরাম সাপুড়ে,
     
কোথা যাস্বাপুরে?
আয় বাবা দেখে যা,
     
দুটো সাপ রেখে যা !
যে সাপের চোখ নেই,
     
শিং নেই নোখ্নেই,
ছোটে না কি হাঁটে না,
     
কাউকে যে কাটে না,
করে নাকো ফোঁস ফাঁস,
     
মারে নাকো ঢুঁশঢাঁশ,
নেই কোন উৎপাত,
     
খায় শুধু দুধ ভাত-
সেই সাপ জ্যান্ত
     
গোটা দুই আনত ?
তেড়ে মেরে ডাণ্ডা
     
'রে দেই ঠাণ্ডা

ঠিকানা - সুকুমার রায়


আরে আরে জগমোহন- এস, এস, এস-
বলতে পার কোথায় থাকে আদ্যানাথের মেসো ?
আদ্যানাথের নাম শোননি ? খগেনকে তো চেনো ?
শ্যাম বাগ্চি খগেনেরই মামাশ্বশুর জেনো
শ্যামের জামাই কেষ্টমোহন, তার যে বাড়ীওলা-
(
কি যেন নাম ভুলে গেছি), তারই মামার শালা ;
তারই পিশের খুড়তুতো ভাই আদ্যানাথের মেশো-
লক্ষ্মী দাদা, ঠিকানা তার একটু জেনে এসো

জীবনের হিসাব - সুকুমার রায়



বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে
মাঝিরে কন, "বলতে পারিস সূর্যি কেন ওঠে ?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে ? জোয়ার কেন আসে ?"
বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যাল্ফেলিয়ে হাসে
বাবু বলেন, "সারা জনম মরলিরে তুই খাটি,
জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি

গন্ধ বিচার - সুকুমার রায়

আবৃত্তি: আরিফ শামসুল

সিংহাসনে বস্‌ল রাজা বাজল কাঁসর ঘণ্টা,
ছট্‌ফটিয়ে উঠ্‌ল কেঁপে মন্ত্রীবুড়োর মনটা ।
বল্‌‌লে রাজা, "মন্ত্রী, তোমার জামায় কেন গন্ধ ?"
মন্ত্রী বলে, "এসেন্স দিছি- গন্ধ ত নয় মন্দ !"
রাজা বলে, "মন্দ ভালো দেখুক শুঁকে বদ্যি, "
বদ্যি বলে, "আমার নাকে বেজায় হল সর্দি ।"
রাজা হাঁকেন, "বোলাও তবে— রাম নারায়ণ পাত্র ।"
পাত্র বলে, "নস্যি নিলাম এক্ষনি এইমাত্র—
নস্যি দিয়ে বন্ধ যে নাক, গন্ধ কোথায় ঢুকবে ?"
রাজা বলেন, "কোটাল তবে এগিয়ে এস, শুঁকবে ।"
কোটাল কহে, "পান খেয়েছি মশলা তাহে কর্পূর,
গন্ধে তারি মুণ্ডু আমার এক্কেবারে ভরপুর ।"
রাজা বলেন, "আসুক তবে শের পালোয়ান ভীমসিং,"
ভীম বলে, "আজ কচ্ছে আমার সমস্ত গা ঝিম্‌ ঝিম্‌ ।
রাত্রে আমার বোখার হল, বল্‌ছি হুজুর ঠিক বাৎ"—
ব'লেই শুল রাজসভাতে চক্ষু বুজে চিৎপাত ।
রাজার শালা চন্দ্রকেতু তারেই ধ'রে শেষটা
বল্‌ল রাজা, "তুমিই না হয় কর না ভাই চেষ্টা ।"
চন্দ্র বলেন, "মারতে চাও ত ডাকাও না হয় জল্লাদ,
গন্ধ শুঁকে মর‌‌তে হবে এ আবার কি আহ্লাদ ?"
ছিল হাজির বৃদ্ধ নাজির বয়সটি তার নব্বই,
ভাব্‌‌লে মনে, "ভয় কেন আর একদিন তো মরবই—"
সাহস ক'রে বল্‌‌লে বুড়ো, "মিথ্যে সবাই বক্‌‌ছিস,
শুঁকতে পারি হুকুম পেলে এবং পেলে বক্‌‌শিস ।"
রাজা বলেন, "হাজার টাকা ইনাম পাবে সদ্য,"
তাই না শুনে উৎসাহেতে উঠ্‌ল বুড়ো মদ্দ ।
জামার পরে নাক ঠেকিয়ে- শুঁক্‌ল কত গন্ধ,
রইল অটল, দেখ্‌‌লে লোকে বিস্ময়ে বাক্‌ বন্ধ ।
রাজ্যে হল জয় জয়কার বাজ্‌ল কাঁসর ঢক্কা,
বাপ্‌‌রে কি তেজ বুড়োর হাড়ে, পায় না সে যে অক্কা !

কাজের লোক - সুকুমার রায়





প্রথম
বাঃ- আমার নাম 'বাঃ',
বসে থাকি তোফা তুলে পায়ের উপর পা !
লেখাপড়ার ধার ধারিনে, বছর ভরে ছুটি,
হেসে খেলে আরাম 'রে দুশো মজা লুটি
কারে কবে কেয়ার করি, কিসের করি ডর ?
কাজের নামে কম্প দিয়ে গায়ে আসে জ্বর
গাধার মত খাটিস্তোরা মুখটা করে চুন-
আহাম্মুকি কাণ্ড দেখে হেসেই আমি খুন
সকলে
আস্ত একটি গাধা তুমি স্পষ্ট গেল দেখা,
হাস্ যত, কান্না তত কপালেতে লেখা
_