Showing posts with label প্রেমের কবিতা. Show all posts
Showing posts with label প্রেমের কবিতা. Show all posts

এক কোটি বছর তোমাকে দেখি না ‍~ মহাদেব সাহা

এক কোটি বছর হয় তোমাকে দেখি না
একবার তোমাকে দেখতে পাবো
এই নিশ্চয়তাটুকু পেলে-
বিদ্যাসাগরের মতো আমিও সাঁতরে পার
হবো ভরা দামোদর
…কয়েক হাজার বার পাড়ি দেবো ইংলিশ চ্যানেল;
তোমাকে একটিবার দেখতে পাবো এটুকু ভরসা পেলে
অনায়াসে ডিঙাবো এই কারার প্রাচীর,
ছুটে যবো নাগরাজ্যে পাতালপুরীতে
কিংবা বোমারু বিমান ওড়া
শঙ্কিত শহরে।
যদি জানি একবার দেখা পাবো তাহলে উত্তপ্ত মরুভূমি
অনায়াসে হেঁটে পাড়ি দেবো,
কাঁটাতার ডিঙাবো সহজে, লোকলজ্জা ঝেড়ে মুছে
ফেলে যাবো যে কোনো সভায়
কিংবা পার্কে ও মেলায়;
একবার দেখা পাবো শুধু এই আশ্বাস পেলে
এক পৃথিবীর এটুকু দূরত্ব
আমি অবলীলাক্রমে পাড়ি দেবো।
তোমাকে দেখেছি কবে, সেই কবে, কোন বৃহস্পতিবার
আর এক কোটি বছর হয় তোমাকে দেখি না।


যা চেয়েছি, যা পাবো না - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

- কী চাও আমার কাছে?
- কিছু তো চাইনি আমি !
- চাওনি তা ঠিক ।
তবু কেন এমন ঝড়ের মতো ডাক দাও?
- জানি না । ওদিকে দ্যাখো ...
রোদ্দুরে রুপোর মতো জল
তোমার চোখের মতো দূরবর্তী নৌকো
চর্তুদিকে তোমাকেই দেখা।
- সত্যি করে বলো, কবি, কী চাও আমার কাছে?
- মনে হয় তুমি দেবী
- আমি দেবী নই ।
- তুমি তো জানো না তুমি কে !

ফুল ফুটুক না ফুটুক - সুভাষ মুখোপাধ্যায়


ফুল ফুটুক না ফুটুক
আজ বসন্ত।

শান-বাঁধানো ফুটপাথে
পাথরে পা ডুবিয়ে এক কাঠখোট্টা গাছ
কচি কচি পাতায় পাঁজর ফাটিয়ে
হাসছে।

জং - প্রেমেন্দ্র মিত্র

হাওয়া বয় শনশন
তারারা কাঁপে
হৃদয়ে কি জং ধরে
পুরনো খাপে !

কার চুল এলোমেলো
কিবা তাতে আসে গেল!
কার চোখে কত জল
কেবা তা মাপে?

দিনগুলো কুড়াতে
কত কি তো হারাল
ব্যথা কই সেই ফলা-
বিধেঁছে যা ধারালো!

হাওয়া বয় শনশন
তারারা কাঁপে
জেনে কিবা প্রয়োজন
অনেক দূরের বন
রাঙা হলো কুসুমে, না
বহ্নিতাপে?
হৃদয় মর্চে ধরা
পুরনো খাপে!!

এ ভরা বাদর মাহ ভাদর - বিদ্যাপতি


-
সখি হামারি দুখের নাহি ওর।
ভরা বাদর                        মাহ ভাদর
শূন্য মন্দির মোর ||||
ম্পি ঘন                        গরজন্তি সন্ততি
ভূবন ভরি বরিখিন্তিয়া।
কান্ত পাহুন                        কাম দারুণ
সঘন খরশর হন্তিয়া ||||
কুশিল শত শত                        পাত-মোদিত
ময়ূর নাচত মাতিয়া।
মত্ত দাদুরী                        ডাকে ডাহুকী
ফাটি যাওত ছাতিয়া ||১১||
তিমির দিগ্ভরি                        ঘোর যামিনী
অথির বিজুরিপাঁতিয়া।
বিদ্যাপতি কহ                        কৈছে গোঙায়বি
হরি বিনে দিন রাতিয়া ||১৫||

কথোপকথন – ৪ পূর্ণেন্দু পত্রী

যে কোন একটা ফুলের নাম বল
দুঃখ
যে কোন একটা নদীর নাম বল
বেদনা
যে কোন একটা গাছের নাম বল
দীর্ঘশ্বাস
যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল
অশ্রু
এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি
বলো
খুব সুখী হবে জীবনে
শ্বেত পাথরে পা
সোনার পালঙ্কে গা
এগুতে সাতমহল
পিছোতে সাতমহল
ঝর্ণার জলে স্নান
ফোয়ারার জলে কুলকুচি
তুমি বলবে, সাজবো
বাগানে মালিণীরা গাঁথবে মালা
ঘরে দাসিরা বাটবে চন্দন
তুমি বলবে, ঘুমবো
অমনি গাছে গাছে পাখোয়াজ তানপুরা,
অমনি জোৎস্নার ভিতরে এক লক্ষ নর্তকী
সুখের নাগর দোলায় এইভাবে অনেকদিন
তারপর
বুকের ডান পাঁজরে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে
রক্তের রাঙ্গা মাটির পথে সুড়ঙ্গ কেটে কেটে
একটা সাপ
পায়ে বালুচরীর নকশা
নদীর বুকে ঝুঁকে-পড়া লাল গোধূলি তার চোখ
বিয়েবাড়ির ব্যাকুল নহবত তার হাসি,
দাঁতে মুক্তোর দানার মত বিষ,
পাকে পাকে জড়িয়ে ধরবে তোমাকে
যেন বটের শিকড়
মাটিকে ভেদ করে যার আলিঙ্গন
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত হাসির রং হলুদ
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত গয়নায় শ্যাওলা
ধীরে ধীরে তোমার মখমল বিছানা
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে সাদা
সেই সাপটা বুঝি তুমি ?
না
তবে?
স্মৃতি
বাসর ঘরে ঢুকার সময় যাকে ফেলে এসেছিলে
পোড়া ধুপের পাশে

_