Showing posts with label দ্বৈত আবৃত্তির কবিতা. Show all posts
Showing posts with label দ্বৈত আবৃত্তির কবিতা. Show all posts

ঠিকানা - সুকুমার রায়


আরে আরে জগমোহন- এস, এস, এস-
বলতে পার কোথায় থাকে আদ্যানাথের মেসো ?
আদ্যানাথের নাম শোননি ? খগেনকে তো চেনো ?
শ্যাম বাগ্চি খগেনেরই মামাশ্বশুর জেনো
শ্যামের জামাই কেষ্টমোহন, তার যে বাড়ীওলা-
(
কি যেন নাম ভুলে গেছি), তারই মামার শালা ;
তারই পিশের খুড়তুতো ভাই আদ্যানাথের মেশো-
লক্ষ্মী দাদা, ঠিকানা তার একটু জেনে এসো

যুগলবন্দি | আবুল হাসান


দেখা হলো যদি আমাদের দুর্দিনে
আমি চুম্বনে চাইবো না অমরতা!
আমাদের প্রেম হোক বিষে জর্জর
সর্পচূড়ায় আমরা তো বাঁধি বাসা।
থাকুক দুচোখে দুর্ভিক্ষের দাহ,
ঝরুক আবার আন্ধার আঁধিঁব্যাধি
আমাদের প্রেম না পেলো, কবির ভাষা
কাব্যচূড়ায় আমরা তো বাঁধি বাসা।

মেঘবালিকার জন্য রূপকথা - জয় গোস্বামী


আমি যখন ছোট ছিলাম
খেলতে যেতাম মেঘের দলে
একদিন এক মেঘবালিকা
প্রশ্ন করলো কৌতুহলে
এই ছেলেটা, নাম কি রে তোর?’
আমি বললাম, ফুস মন্তর
মেঘবালিকা রেগেই আগুন,
মিথ্যে কথা, নাম কি অমন হয় কখনো?
আমি বললাম, নিশ্চয়ই হয়, আগে আমার গল্প শোনো

যদি ভালবাসা পাই – রফিক আজাদ


যদি ভালোবাসা পাই              আবার শুধরে নেব
                            
জীবনের ভুলগুলি
যদি ভালোবাসা পাই              ব্যাপক দীর্ঘপথে
                             তুলে নেব ঝোলাঝুলি
যদি ভালোবাসা পাই              শীতের রাতের শেষে
                             মখমল দিন পাবো
যদি ভালোবাসা পাই              পাহাড় ডিঙাবো আর
                             সমুদ্র সাঁতরাবো
যদি ভালোবাসা পাই              আমার আকাশ হবে
                             দ্রুত শরতের নীল
যদি ভালোবাসা পাই              জীবনে আমিও পাব
                             মধ্য-অন্ত্যমিল।
যদি ভালোবাসা পাই              আবার শুধরে নেব
                             জীবনের ভুলগুলি
যদি ভালোবাসা পাই              শিল্পদীর্ঘপথে
                             বয়ে যাবো কাঁথাগুলি

মাধবীর জন্যে - পূর্ণেন্দু পত্রী

আয়নার পাশে একটু অন্ধকার ছায়া এঁকে দাও।
ব্যথিত দৃশ্যের পট জুড়ে থাক চিত্রিত আঁধার।
দেয়ালের ছবিটাকে একটু সরাতে হবে ভাই।
ওটা নয়, এই ছবিটাকে।
জুলিয়েট জ্যেৎস্নার ভিতরে
রক্তে উচ্চকিত তৃষ্ণা রোমিওর উষ্ণ ওষ্ঠাধরে।
ব্যাস, ব্যাস।
লাইটস্ বার্ণিং।
মাধবী, আসুন।
একটা ক্লোজআপ নেব।
এখানে দাঁড়ান, একটু বা দিক ঘেঁষে প্লীজ।
মনিটার…

দোতলার ল্যান্ডিং মুখোমুখি ফ্ল্যাট। একজন সিঁড়িতে, একজন দরোজায় - আহসান হাবীব


চিল্কায় সকাল - বুদ্ধদেব বসু

কী ভালো আমার লাগলো আজ এই সকালবেলায়
কেমন করে বলি?
কী নির্মল নীল এই আকাশ, কী অসহ্য সুন্দর,
যেন গুণীর কণ্ঠের অবাধ উন্মুক্ত তান
দিগন্ত থেকে দিগন্তে;

হঠাৎ দেখা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবিনি সম্ভব হবে কোনদিন।।

আগে ওকে বারবার দেখেছি
লাল রঙের শাড়িতে
দালিম-ফুলের মত রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
দোলন-চাঁপার মত চিকন-গৌর মুখখানি ঘিরে।
মনে হল, কাল রঙের একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব সর্ষেক্ষেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা:
চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।।

ভালোবাসার সংজ্ঞা – রফিক আজাদ

ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি,
পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা;
ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া,
বিরহ-বালুতে খালিপায়ে হাঁটাহাঁটি;
ভালোবাসা মানে একে অপরের প্রতি
খুব করে ঝুঁকে থাকা;
ভালোবাসা মানে ব্যাপক বৃষ্টি, বৃষ্টির একটানা
ভিতরে-বাহিরে দুজনের হেঁটে যাওয়া;
ভালোবাসা মানে ঠাণ্ডা কফির পেয়ালা সামনে
অবিরল কথা বলা;
ভালোবাসা মানে শেষ হয়ে-যাওয়া কথার পরেও
মুখোমুখি বসে থাকা।
_